জাতীয়

দেশের মধ্যে এক হাজার ১৫৬টি নদ-নদীর খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়

  প্রতিনিধি ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৯:৪৭:২৬ প্রিন্ট সংস্করণ

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে অতিথি ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (বাপাউবো) মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞাসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে নাজমুল আহসান জানান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর এই খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এটি জমির সিএস এবং আরএসের মাধ্যমে হয়েছে।

এই তালিকায় ৩৬৫টি এমন নদীর নাম যুক্ত করা হয়েছে, যেগুলো ২০১১ সালে বাপাউবোর প্রকাশ করা ৪০৫টি নদী এবং ২০২৩ সালে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রস্তুত করা এক হাজার আটটি নদীর তালিকায় ছিল না।

তিনি জানান, ২০১১ সালে বাপাউবো কর্তৃক প্রকাশিত ৪০৫টি নদীর তালিকায় থাকা ১৮টি নদী এবং ২০২৩ সালে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রকাশ করা এক হাজার আট নদীর তালিকায় থাকা ২২৪টি নদীর নাম পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তালিকায় রাখা হয়নি। এই বিষয়ে অধিকতর যাচাই-বাছাই করা হবে।

আগামী পহেলা বৈশাখে নদ-নদীর এই তালিকা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, ‘এই খসড়া তালিকা প্রস্তুতের সঙ্গে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় জড়িত। আমরা এখানে ভূমি মন্ত্রণালয়কেও যুক্ত করব। আমরা তিনটি মন্ত্রণালয় মিলে একসঙ্গে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে এই তালিকা চূড়ান্ত করে আমাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে দিতে চাই।’

রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘যে নদীগুলোর নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, সেগুলোর যদি রেকর্ড থাকে তাহলে ডিসিদের বলব, যাচাই করে আমাদের পাঠিয়ে দিতে। নদীর সংখ্যাটা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে হবে। পহেলা বৈশাখের মধ্যে নদীর সংখ্যার চূড়ান্ত তালিকা দিয়েই আমরা থেমে থাকব না। এরপর পর্যায়ক্রমে নদীর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, অবস্থাসহ অন্যান্য তথ্য সেই তালিকায় যুক্ত করা হবে। তালিকায় নদীর অফিশিয়াল নামের পাশাপাশি স্থানীয় নামও থাকবে।’

মৃত নদী বলে কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবাহহীন নদী বলা যায়, কিন্তু মৃত নদী বলার সুযোগ নেই। মৃত নদী বলেই ডিসিদের কেউ কেউ নদীকে লিজ দিয়ে ফেলেন। প্রবাহহীন নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে আনার সুযোগ থাকে। কিন্তু, মৃত ঘোষণা করলে নদীর জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এটা আমরা হতে দেব না।’

রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘আমরা হাওর ও বিলের তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলেছি। এরপরে আমরা খালের তালিকা চূড়ান্ত করব। আজকে থেকে তিন মাসের মধ্যে ডিসিরা এই তালিকা করবেন।’

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘অসম্ভব রকমের নদী দূষণ হচ্ছে। এই দূষণ যে শুধু ব্যবসায়ীরা করছে তা নয়, নদীর ভেতরে বহু ড্রেজার ও ছোট ছোট জাহাজ ডুবে আছে। এভাবে নদীগুলো মরে যাচ্ছে। এগুলো উদ্ধার করতে হবে। নইলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে চর পড়ে যাবে।’

তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) ব্যবহার না করে যেসব কারখানার নদীর মধ্যে বর্জ্য ফেলছে, তাদের ড্রেনগুলো পাকা করে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নদী উদ্ধার করার এখনই সময়। অবৈধ বালুমহালগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। শুধু সংখ্যা দিয়ে বিবেচনা না করে নদীগুলো কী অবস্থায় আছে তা বিবেচনা করতে হবে।’

আরও খবর

Sponsered content