প্রতিনিধি ৪ মে ২০২৫ , ৬:১৯:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক নারায়ণগঞ্জ:
দীর্ঘ প্রায় ৯ মাস পর নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস কার্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ রোববার ০৪ মে সকাল সাড়ে ১০টায় এই কার্যক্রম শুরু হয়। এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
গত ৩০ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ১মিনিট থেকে অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়াও শুরু হয়। নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক জামাল হোসেন সোহান বলেন, প্রায় ৪ মাসের সংস্কার কাজের পরে ভবনটি নতুনভাবে ব্যবহারের উপযোগী হয়েছে। গত মাসে উদ্বোধনের কথা থাকলেও সার্ভার জটিলতার কারণে তা পিছিয়ে যায়। এখন থেকে নারায়ণগঞ্জের পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা সরাসরি অফিসে এসে তাদের আবেদনপত্র জমা দিতে পারবেন এবং ছবি ও বায়োমেট্রিক প্রদানের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করতে পারবেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, পাসপোর্ট হচ্ছে একজন নাগরিকের জাতীয়তা এবং তার নাগরিক পরিচয়ের অন্যতম একটি ডুকুমেন্ট। দীর্ঘ ৯ মাস এই অফিসটির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পাসপোর্ট অফিসের আছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আবার এই অফিসের কার্যক্রমটি শুরু করার জন্য। নারায়ণগঞ্জ একটি শিল্প ঘন জেলা। যারা শিল্পের সাথে জড়িত প্রতিনিয়ত তাদের বিদেশ ভ্রমণ করতে হয় তাদের জন্য পাসপোর্টটি খুবই প্রয়োজন। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জে অনেক মানুষের বসবাস। এই জেলা মানুষকে প্রায়সময় দেশের বাইরে যেতে হয়। সেই লক্ষ্যে আবার এটি নতুনভাবে চালু হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি পাসপোর্ট নিয়ে এই জেলার মানুষের যে ভোগান্তি ছিলো সেটা দূর হবে। আমরা চাই এই অফিসটি পুরোপুরি দালালমুক্ত এবং মানুষের পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে কোনো রকমের প্রতিবন্ধকতা হবে না। যারা পাসপোর্ট করতে আসবে তারা যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট পেয়ে যায়। এখানে কোনো অভিযোগ আসলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নিবো। রোহিঙ্গা কিংবা যারা বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিতে পারবে না এরকম কেউ যদি এখান থেকে পাসপোর্ট নেয় এরকম অভিযোগ আসলে অব্যশ্যই ব্যবস্থা নিবো।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই রাতে নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। অগ্নিকাণ্ডে বিতরণের অপেক্ষায় থাকা প্রায় আট হাজার পাসপোর্ট পুড়ে যায়। শুধু তাই নয় পুরো অফিস ভবনটিই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
অগ্নিকাণ্ডের ফলে ভবনের নিচতলা থেকে শুরু করে চতুর্থ তলার গুরুত্বপূর্ণ বায়ো এনরোলমেন্ট যন্ত্রপাতি, প্রশাসনিক বিভাগ, অফিসের সরঞ্জাম, জরুরি নথি, ফাইলপত্র এবং রেকর্ডরুমসহ সবকিছু পুড়ে যায়। এরপর থেকে নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানার (সিদ্ধিরগঞ্জ, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, বন্দর, সোনারগাঁ, ফতুল্লা ও সদর) বাসিন্দারা চরম ভোগান্তির শিকার হন। পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাজের জন্য তাদের পার্শ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ ও নরসিংদীতে যেতে হয়েছিল। তাই আজ নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস পুনরায় চালু করার সক্ষম হয়েছে।