নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল।

ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন কলেজ ক্যাম্পাসে একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও দগ্ধ অবস্থায় অন্তত ৬০ জনকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বিমানচালকসহ অন্তত ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার জানিয়েছেন, মাইলস্টোন কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি ফাইটার জেট বিধ্বস্ত হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জানিয়েছেন, উদ্ধার কাজ এখনো চলমান রয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং না হওয়া পর্যন্ত হতাহতের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর পরই আশেপাশের মানুষ দগ্ধ শিক্ষার্থীদের রিকশা ও ভ্যানে করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কলেজের শিক্ষক নুরুজ্জামান মৃধা জানান, বেশ কিছু শিক্ষার্থী দগ্ধ অবস্থায় নিজেই সাহায্য চেয়ে বেরিয়ে আসেন।
দুর্ঘটনার সময় কলেজ ছুটির মুহূর্ত ছিল এবং যে ভবনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, সেখানে প্লে গ্রুপসহ ছোট বাচ্চাদের ক্লাস চলত বলে জানা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সেনাবাহিনীর সদস্যরা আহতদের সরিয়ে নিচ্ছেন এবং এক শিক্ষার্থী আরেকজন দগ্ধ বন্ধুকে কোলে করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলছেন।
বিমান বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বিধ্বস্ত হওয়া এফ-৭ বিজেআই মডেলের প্রশিক্ষণ বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে এবং মাত্র ১২ মিনিট পর ১টা ১৮ মিনিটে দুর্ঘটনায় পড়ে। ফায়ার সার্ভিস দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ১টা ২২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে।
উদ্ধার অভিযানে অন্তত আটটি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট, দুটি বিজিবি প্লাটুন, এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান জানান, এ পর্যন্ত অন্তত ৪৫ জন দগ্ধ রোগী হাসপাতালে এসেছেন, যাদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক—উভয়ই রয়েছেন।
বিমানটি চালাচ্ছিলেন বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার তৌকির ইসলাম। তার অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনা তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।