প্রতিনিধি ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১২:৪৮:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ
আকবর জুয়েল, লালমোহন ভোলা:
৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলা। এই উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার আলো ছড়াতে বর্তমানে রয়েছে মোট ২১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে এরমধ্যে ৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়গুলোর পাঠদান থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম। এছাড়া শূণ্য ৬৮টি সহকারী শিক্ষকের পদও। এতে করে ওইসব বিদ্যালয়গুলোতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। এছাড়াও দিন দিন বিদ্যালয়গুলোতে কমছে শিক্ষার গুণগত মান। লালমোহন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রধান শিক্ষকহীন কয়েকটি বিদ্যালয়ের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সহকারী শিক্ষক জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি আমাদের মতোই একজন সহকারী শিক্ষক। তাই অনেক ক্ষেত্রেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষককে বিদ্যালয়ের অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে গিয়ে চরম ব্যাঘ পেতে হচ্ছে। অনেক সহকারী শিক্ষকই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা মানতে অনীহা প্রকাশ করেন। যার ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া মারাত্মকভাবে বিঘ্ন ঘটছে। তাই বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক পদায়ণ খুবই জরুরি।
অপরদিকে প্রধান শিক্ষকহীন ওইসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বলছেন, যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, তিনি মূলত ওই বিদ্যালয়েরই একজন সহকারী শিক্ষক। ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অফিসিয়াল কাজে অনেক সময়ই ব্যস্ত থাকেন। যার জন্য তিনি বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসতে পারেন না। এছাড়া বিদ্যালয়েল অন্যান্য সহকারী শিক্ষকরাও তার নির্দেশনা সঠিকভাবে মানছেন না। যার ফলে আমাদের বাচ্চাদের পড়ালেখায় সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুত এসব বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক পদায়ণ করে শিক্ষার গুণগত মান ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান মিলন জানান, আমাদের উপজেলার ৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। যার জন্য সত্যিই প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডসহ বিদ্যালয়ের পাঠদান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এজন্য আমরা এরইমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রধান শিক্ষক পদায়ণের জন্য তালিকা পাঠিয়েছি। কর্তৃপক্ষ ওই তালিকা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদায়ণ করলেই বিদ্যালয়গুলোতে যে সমস্যা হচ্ছে তা কেটে যাবে। আশা করছি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যেই বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক পদায়ণ করবেন।
এই শিক্ষা কর্মকর্তা আরো জানান, এছাড়া লালমোহন উপজেলায় এখনো ৬৮টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে। আমরা সহকারী শিক্ষকের ওইসব পদ পূরণের জন্যও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তালিকা পাঠিয়েছি। সামনে নতুন শিক্ষকের নিয়োগ হলেই উপজেলার যেসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নেই তা পূরণ হয়ে যাবে। আশা করছি এরপর শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আর কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।