 
     আ জা ডেক্স:
আ জা ডেক্স:
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুকুল এবং তার ভাই মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলের নেতা মাহমুদুর রহমান নাঈমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জায়গা দখল, অস্ত্রের মহড়া, মাদক ব্যবসা, এবং হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে কাশীপুর এলাকাজুড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ক্যাডার বাহিনী সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে পুরো এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, বিএনপির রাজনীতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মুকুল ও নাঈম দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় চাঁদাবাজি, ভূমি দখল ও জবরদখলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। ২০২৩ সালের ১৪ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটিতে বিশাল অংকের টাকার বিনিময়ে প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদকের পদ হাসিল করে মাহবুব রহমান মুকুল এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বর্তমান সদস্য গিয়াসউদ্দিনের ছেলে সাদরিলের সাথে সখ্যতা গড়ে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম দলের ফতুল্লা থানা শাখার আহবায়ক (সম্ভ্রাব্য) পদ হাসিল করে মাহমুদুর রহমান নাঈম। বিএনপির পদ পদবি বাগিয়ে ও বিএনপির ব্যানার ব্যাবহার করে তাদের দুই ভাইয়ের তান্ডব সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুললেও তাদের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন রয়েছে নিশ্চুপ।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে এনায়েতনগরে মাসুম মিয়ার ছেলে সাজ্জাদকে নির্মমভাবে হত্যা করে মুকুলের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসী গ্রুপ। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই মামলার কোন অগ্রগতি নেই। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে প্রভাবশালী মহলের সহায়তা নিয়েছেন মুকুল ও তার অনুসারীরা।
মাদকের বিস্তারেও মুকুল-নাঈম গংয়ের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে বারবার। তারা কিশোরদের ব্যবহার করে ‘কিশোর গ্যাং’ গঠন করে এলাকায় ভীতি ছড়িয়েছে। এই কিশোর গ্যাং সদস্যরা স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের হয়রানি, চাঁদাবাজি, মারধরের মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে নিয়মিত।
সম্প্রতি আরও একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে কাশীপুর আওয়ামী লীগের নেতা মোঃ গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সুমনের দোকানে। অভিযোগ রয়েছে, মুকুল ও তার ভাই সানীর নেতৃত্বে ক্যাডার বাহিনী ওই দোকানে হামলা চালিয়ে নগদ অর্থ ও ফার্নিচার লুট করে নিয়ে যায়। অভিযোগের পরও প্রশাসন এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
তাদের বাহিনী কাশীপুরে বহু জায়গায় জোরপূর্বক সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দখল করে রেখেছে। অস্ত্রের মহড়া ও হুমকির কারণে সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এলাকাবাসীর ভাষ্য, কাশীপুর যেন একটি অঘোষিত সন্ত্রাসী অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। অথচ দলের কেন্দ্রীয় বা জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো কঠোর বার্তা বা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে প্রশ্ন উঠেছে, তারা কি এই কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অবগত, নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে চোখ বন্ধ করে আছেন?
এলাকাবাসী প্রশাসন ও দলীয় হাই কমান্ডের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে মুকুল ও নাঈমের মতো অপরাধীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে কাশীপুরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা যায়।