প্রতিনিধি ২ আগস্ট ২০২৫ , ১১:৪০:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুর্নীতির কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য নিজেকে দায়ী নন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার (০২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কিছু কিছু লোক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন টাকা-পয়সা এদিক-ওদিক করার জন্য। যারা ব্যাংক ঋণ নিয়েছে, দেশ থেকে টাকা পাচার করেছে, শ্রমিকদের টাকা-পয়সা দিতে পারছে না, তারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। সে কারণে কিছু কারখানা বন্ধ। কারখানা বন্ধের জন্য আমি দায়ী না।”
তিনি আরও জানান, সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত কারখানাগুলোর কারণে রপ্তানি আয় সাত থেকে আট শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান এখনো টিকে আছে এবং তাদের মালিকরা শ্রমিকদের ন্যায্য সেবা নিশ্চিত করছেন।
শ্রমিকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার শেষ নেই। আন্দোলন করতেই পারে। যে কেউ তার দাবি নিয়ে রাস্তায় নামতেই পারে। আমারও দাবি আছে, আমিও রাস্তায় নামতে পারি। একজন নির্বাচনে জিতলে সারাজীবন থাকতে চান— যা এর আগে স্বৈরাচার সরকারের সময় দেখেছেন। আশা করি, এই প্র্যাকটিসগুলো চলমান থাকবে না। নির্বাচনের মাধ্যমে ভালো প্রতিনিধি উঠে আসার প্র্যাকটিস চালু হবে।”
এর আগে, তিনি একই ভবনের নিচতলায় অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। ‘Safe Work, Sustainable Future: Bridging Research & Practice’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত এ সম্মেলনের আয়োজন করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডাইফ), এবং এতে আর্থিক সহায়তা দেয় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, শ্রমখাতের টেকসই উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি সব অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, “প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার রয়েছে শোভন কর্মপরিবেশে কাজ করার এবং দিনশেষে নিরাপদে ও সুস্থভাবে ঘরে ফেরার। আমাদেরকে তা নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন যে, সরকার আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে শ্রমখাতের উন্নয়নে গবেষণাভিত্তিক নীতিনির্ধারণে অঙ্গীকারবদ্ধ।
এ সময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম শফিকুজ্জামান এবং সভাপতিত্ব করেন কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিপ্তরের মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত সচিব) ওমর মো. ইমরুল মহসিন।
এছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইএলও’র টেকনিক্যাল স্পেশালিস্ট (লেবার ইন্সপেকশন অ্যান্ড ওএসএইচ) মি. রন জনসন, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব জাহেদা পারভিন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) প্রফেসর ড. রেহানা খানমসহ শ্রমখাত সংশ্লিষ্ট অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
পরবর্তীতে, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত আরেকটি অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা প্রায় ২৯ লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন ৫০ জন অসহায় শ্রমিকের মাঝে।