জাতীয়

মাগুরায় চোখের জলে শিশুটিকে চিরবিদায় জানায় এলাকাবাসী

  প্রতিনিধি ১৩ মার্চ ২০২৫ , ৪:৫৮:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

মাগুরায় ধর্ষণ ও নির্যাতনে মারা যাওয়া আট বছরের শিশুটির মরদেহ দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বাদ এশা শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রাম সোনাইকুন্ডী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সোনাকুন্ডী সম্মিলিত ঈদগা ও গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

জানাজায় মানুষের ঢল নামে। চোখের জলে শিশুটিকে চিরবিদায় জানায় এলাকাবাসী।জানাজায় অংশ নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, মাগুরার জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

এর আগে দুপুরে শিশুটি ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়। সন্ধ্যার আগে তার মরদেহ নিয়ে সিএমএইচ থেকে হেলিকপ্টারে মাগুরার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সেনাবাহিনী। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টাটি মাগুরা স্টেডিয়ামে অবতরণ করে। এরপর অ্যাম্বুলেন্সে মেয়েটির মরদেহ শহরের নোমানী ময়দানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সন্ধ্যা ৭টার দিকে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে শিশুটির মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কাঁদছেন শিশুটির স্বজন ও প্রতিবেশীরা। দুপুরে তার মৃত্যুর খবর তার বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামে পৌঁছালে কান্নায় ভেঙে পড়েন আতীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ এলাকাবাসী।

মাগুরার বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত মানুষ ছুটে আসে তাদের বাড়িতে। পুরো এলাকায় চলছে শোকের মাতম। শিশু, কিশোর-কিশোর, নারী-পুরুষসহ নানা বয়সী মানুষের একটাই দাবি- ধর্ষকের ফাঁসি চাই, ফাঁসি। এ ঘটনার শাস্তি দাবি করেন তারা।

শিশুটির খালা ধোলায় বেগম রোকেয়া আহাজারি করে বলেন, আমাদের মনি আর নেই। আমরা মনিরে আর জীবিত দেখতে পারব না। আমরা সঠিক বিচার চাই।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (৫ মার্চ) আট বছরের শিশুটি মাগুরার নিজনান্দুয়ালী এলাকায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে  ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে শিশুটিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল।

ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে চারজনের নামে মামলা করেন। ধর্ষণের অভিযোগে শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগমকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের রোববার (৯ মার্চ) দিনের বেলা আদালতে হাজির করতে পারেনি পুলিশ। পরিস্থিতি বিবেচনায় গভীর রাতে রিমান্ড আবেদনের শুনানি করে আদালত।

এ সময় আদালত মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখকে সাত দিন এবং অন্য তিন আসামিকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পাঁচ দিন করে রিমান্ড প্রাপ্তরা হলেন— হিটু শেখের স্ত্রী জাহেদা বেগম, বড় ছেলে সজীব শেখ ও ছোট ছেলে রাতুল শেখ।

শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

আরও খবর

সিরাতুন্নবী (সা.) মানবজাতির জন্য একটি বিশ্বজনীন বার্তা –ধর্ম উপদেষ্টা

ধানমন্ডিতে সাবেক সচিব, বিচারক ও কর্মকর্তাদের দেয়া ১২ ফ্ল্যাটে বরাদ্দ বাতিল…জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ

কক্সবাজারের‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ স্থাপনের বরাদ্দ বনভূমির বাতিল করেছে সরকার

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অ্যাড্রেস না করে কখনোই সুষম বিকশিত রাষ্ট্র গড়ে তুলতে পারবনা…প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা

মৌলবাদীর হুমকির কাছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আপস উদ্বেগজনক ঝুঁকিপূর্ণ:টিআইবি

মিজানুর রহমান আজহারীকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ ৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছেন।

Sponsered content