এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সাড়া দিয়ে বলেন, ১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ভারত একসাথে এসব বিষয় সমাধান করেছে। তবে, যদি আরও কোনো অমীমাংসিত বিষয় থাকে, তবে সেগুলো সমাধান করতে আমি প্রস্তুত আছি এবং তা দেখতে আমি আনন্দিত হব।অধ্যাপক ইউনূস এই বৈঠকে আরও বলেন, এই বিষয়গুলোর সমাধান করা ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যাতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয় এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকে।

এছাড়া, দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্রীড়া, এবং সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদের বিনিময় বাড়ানোর বিষয়েও একমত হন। তাদের মধ্যে আলোচনা হয় কীভাবে এই খাতগুলোতে দুই দেশের সহযোগিতা বাড়ানো যেতে পারে। বিশেষভাবে, চিনি শিল্প এবং ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তারা।
অধ্যাপক ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, সার্ক পুনরুজ্জীবনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করা হবে। সার্ককে নতুন করে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য উপকারী হবে। তিনি ২০২৬ সালের মধ্যভাগের মধ্যে ‘প্রয়োজনীয় সংস্কার’ এবং সাধারণ নির্বাচন আয়োজনে তার সরকারের পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশে ইতিমধ্যেই একটি ঐকমত্য গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা দ্রুত এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ঢাকা ও ইসলামাবাদ উভয়ের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করার জন্য অপেক্ষা করছি। তিনি আরও বলেন, আমরা সার্কের শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, এবং আশা করছি এর মাধ্যমে অঞ্চলজুড়ে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে।পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানে প্রায় এক দশক আগে পাঞ্জাবে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা সফল হয়েছি। আমাদের কাছে ওই অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে। আমরা বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পাকিস্তান থেকে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর জন্য প্রস্তুত আছি।
অধ্যাপক ইউনূস শাহবাজ শরিফের সহায়তার প্রস্তাবের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান তাদের সহযোগিতার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. লুৎফে সিদ্দিকী, এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ড. লুৎফে সিদ্দিকী পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দারকে ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, এবং তিনি সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও অধ্যাপক ইউনূসকে তার সুবিধামতো সময়ে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এই বৈঠকটি বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে, বিশেষ করে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন, আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং যৌথ সমস্যা সমাধানে

 
                















 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                     
                     
                     
                     
                     
                     
                     
                    



